Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় ,সদর, কিশোরগঞ্জ এর ওয়েবপোর্টালে আপনাকে স্বাগতম। উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী এপ্রিল/২০২৫ খ্রি. মাসের অর্জনঃ স্থায়ী পদ্ধতি(মহিলা)=১০৬.৮৯%, আইইউডি=১৪৮.৫৭%, ইমপ্লান্ট=৭৭.৩৯%, খাবার বড়ি(গ্রহণকারী)=১০৬.৫০%, কনডম= ৮৮.৫০%, ইনজেকটেবল(গ্রহণকারী)=৫৭.২৯%


গর্ভবতী সেবা (ANC)

গর্ভকালীন যত্ন

সমগ্র গর্ভকালীন সময়ে অর্থাৎ ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়া থেকে শুরু করে ৯ মাস ৭ দিন ব্যাপী মাঝখানে গর্ভবতী মা ও তার পেটের সন্তানের যত্ন নেওয়াকে গর্ভকালীন যত্ন বলা হয়। নিয়মিত পরীক্ষা এবং উপদেশ প্রদানের মাধ্যমে এটি পরিচালিত হয়। সমগ্র গর্ভকালীন সময়ে কম পক্ষে ৪ বার পরীক্ষা করা প্রয়োজন।

 

যেমন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ অনুযায়ী

১ম ভিজিটঃ ১৬ সপ্তাহ (৪ মাস)

২য় ভিজিটঃ ২৪-২৮ সপ্তাহ (৬-৭ মাস)

৩য় ভিজিটঃ ৩২ সপ্তাহ ( ৮ মাস)

৪ র্থ  ভিজিটঃ ৩৬ সপ্তাহ ( ৯ মাস)

 

গর্ভকালীন যত্নের উদ্দেশ্য  

গর্ভকালীন যত্নের প্রধান উদ্দেশ্য হলো গর্ভবতী মাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থতার মাঝে তৈরী করে তোলা যাতে তার প্রসব স্বাভাবিক হয়, তিনি যেন একটি স্বাভাবিক সুস্থ শিশু জন্ম দেন, সন্তানকে বুকের দুধ দিতে পারেন এবং  সন্তোষজনকভাবে তার এবং শিশুর যত্ন নিতে পারেন।

 

গর্ভকালীন যত্নের কার্যাবলী 

  • মায়ের কোন অসুখ থাকলে তা নির্ণয় করা এবং তার চিকিৎসা করা যেমন-গর্ভাবস্থায় রক্তক্ষরণ, প্রি-একলাম্পশিয়া বা একলাম্পশিয়া এবং বাঁধাপ্রাপ্ত প্রসবের পূর্ব ইতিহাস। 
  • মা যাতে গর্ভকালীন সময়ে নিজের যত্ন নিতে পারেন, আসন্ন প্রসবের জন্য নিজে তৈরী হতে পারেন এবং নবজাত শিশুর যত্ন নিতে পারেন তার শিক্ষা দেয়া। 
  • গর্ভাবস্থায় জটিল উপসর্গগুলি নির্ণয় করা। এর ব্যবস্থাপনা করা যেমন- রক্ত স্বল্পতা, প্রি-একলাম্পশিয়া ইত্যাদি। 
  • ঝুকিপূর্ণ গর্ভ সনাক্ত করা। 
  • উপদেশের মাধ্যমে মাকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করা, রক্তস্বল্পতা, ম্যালেরিয়া এবং ধনুষ্টংকারের প্রতিরোধক ব্যবস্থা নেয়া। 
  • নিরাপদ প্রসব বাড়ীতে না স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কোথায় সম্ভব হবে তা নির্বাচন করা। 
  • প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত কর্মীর ব্যবস্থা করা। 
  • সকল গর্ভবতী মায়ের রেজিষ্ট্রেশন করা। 

 

বাড়িতে কিভাবে গর্ভবতীর যত্ন নেয়া যায়

  • সকল গর্ভবতীকে হাসি খুশি রাখা 
  • গর্ভবতী মাকে একটু বেশী খেতে দেয়া 
  • খাবার যাতে সুষম হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখা 
  • বেশী করে পানি খেতে বলা 
  • পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মাধ্যমে সহায়তা দেয়া 
  • পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে বলা 
  • তাকে মানসিকভাবে প্রস্তুত রাখা 
  • গর্ভবতী মা অসু্‌স্থ হলে তাড়াতাড়ি স্বাস্থ্য কর্মী বা ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া 

 

গর্ভবতীর খাবার 

গর্ভবতী মায়ের খাবারের তালিকা

শক্তিদায়ক খাবারঃ যেমন

  • ভাত, রুটি/পরাটা, আলু, চিনি, গুড়, সুজি
  • সয়াবিন তেল, বাদাম, কলিজা
  • ঘি/মাখন, ডিমের কুসুম ইত্যাদি

শক্তি ক্ষয়পূরণ এবং নবজাতকের শরীর বৃদ্ধিকারক খাবার-যেমনঃ 

  •  মাছ, মাংস, দুধ, ডিমের সাদা অংশ 
  • বিভিন্ন ধরনের ডাল, মটরশুটি, সীমের বীচি ইত্যাদি 

 

শক্তি রোগ প্রতিরোধক খাবার-যেমনঃ

  • সবুজ, হলুদ ও অন্যান্য রঙ্গিন শাক-সবজি 
  • সবধরনের মৌসুমী ফল-মূল 

 

গর্ভবতী মা কি খাবেন,কি পরিমাণ খাবেন

  • প্রতিদিন তিন ধরণের খাবারের তালিকা থেকেই কিছু কিছু খাবার খেতে হবে। 
  • প্রতিবেলায় স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশী খেতে হবে। 
  • গভর্বতী মাকে বেশী করে পানি খেতে হবে 
  • আয়োডিনযুক্ত লবণ তরকারীর সাথে খেতে হবে। তবে অতিরক্ত লবণ খাওয়া যাবে না।  

 

গর্ভবতী অবস্থায় করণীয়

  • গর্ভাবস্থায় স্বাস্থ্য  সেবাদানকারীর দ্বারা কমপক্ষে ৩ বার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হবে।
  • গর্ভাবস্থায় ২টি টিটি টিকা নিতে হবে।
  • দৈনিক স্বাভাবিকের চেয়ে সাধ্যমত বেশি খাবার খেতে হবে।

 

  • গর্ভবতী মহিলাকে নিয়মিত প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে।
  • গর্ভবতী মহিলাকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। তাকে নিয়মিত গোসলও করতে হবে।
  • দুপুরের খাবারের পর কমপক্ষে ১-২ ঘন্টা বিশ্রাম নিতে হবে।

 

গর্ভবতী অবস্থায় যা করা যাবে না 

  • গৃহস্থালীর কঠিন কাজ যেমন-ধান মাড়াই, ধান ভানা, ঢেঁকিতে চাপা ইত্যাদি 
  • ভারী কোন কিছু তোলা 
  • দূরে যাতায়াত করা এবং ভারী কিছু বহন করা 
  • শরীরে ঝাঁকি লাগে এমন কাজ করা 
  • দীর্ঘ সময় কোন কাজে লিপ্ত থাকা 
  • ঝগড়া ঝাটি এবং ধমক দেয়া 
  • জর্দা, সাদা পাতা খাওয়া 
  • তামাক, গুল ব্যবহার করা 
  • ধূমপান বা অন্য কোন নেশা জাতীয় দ্রব্য গ্রহণ করা 
  • স্বাস্থ্য কর্মী বা ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোন ঔষধ গ্রহণ করা 

গর্ভকালীন প্রয়োজনীয় ৪ টি ব্যবস্থা 

 

  • প্রসবের জন্য প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ধাত্রী বা স্বাস্থ্য সেবা দানকারীকে আগে ঠিক করে রাখতে হবে।
  • প্রসবকালীন ও প্রসবোত্তর সময়ে বাড়তি খরচ এবং জরুরী ব্যবস্থা আগে ঠিক করে রাখতে হবে।
  • প্রসবকালে গর্ভবতী মায়ের অতিরিক্ত রক্তের প্রয়োজন হতে পারে। তাই গর্ভবতী মায়ের রক্তের গ্রুপে মিল আছে এমন তিন জন সুস্থ্য ব্যক্তিকে রক্ত দানের জন্য আগে ঠিক করে রাখতে হবে এবং
  • গর্ভকালীন কোন রকম জটিলতা দেখা দিলে তাকে দ্রুত হাসপাতলে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এজন্য যানবাহন চালকের  (ভ্যানগাড়ির চালক বা নৌকার মাঝি) সাথে আগে থেকে কথা বলে রাখতে হবে।

গর্ভাবস্থায় ও প্রসবের সময় ৫ টি বিপদ চিহ্ন 

গর্ভকালীন জটিলতার ফলে মা ও শিশু উভয়ের জীবনের ঝুকি দেখা দেয়। ৫ টি বিপদ চিহ্নের মাধ্যমে এসব জটিলতা ধরা যায়। এরকম অবস্থায় মায়েদের জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। এই ৫টি বিপদ চিহ্ন হলোঃ

  • গর্ভাবস্থায়, প্রসবের সময় বা প্রসবের পর খুব বেশি রক্তস্রাব, গর্ভফুল না পড়া
  • গর্ভাবস্থায় বা প্রসবের পর তিনদিনের বেশি জ্বর বা দুর্গন্ধ যুক্ত স্রাব
  • গর্ভাবস্থায়, প্রসবকালে ও প্রসবের পরে শরীরে পানি আসা, খুব বেশি মাথা ব্যাথা, চোখে ঝাপসা দেখা
  • গর্ভাবস্থায়, প্রসবের সময় বা প্রসবের পরে খিঁচুনী
  • প্রসব ব্যথা ১২ ঘন্টার বেশি থাকা ও প্রসবের সময় বাচ্চার মাথা ছাড়া অন্য কোন অঙ্গ প্রথমে বের হওয়া।

 

   মনে রাখতে হবে : এর যে কোন একটির জটিল অবস্থা দেখা দিলে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে 

 

স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গর্ভকালীন কি কি সেবা দেয়া হয়  

  • টিটি টিকা দেয়া হয়
  • ওজন নেয়া
  • স্বাস্থ্য শিক্ষা দেয়া
  • রক্তস্বল্পতা বা শরীরে রক্ত কম কি-না তা পরীক্ষা করা
  • রক্তচাপ বা ব্লাড প্রেসার পরিমাপ করা
  • পা অথবা মুখ ফোলা (পানি আছে কিনা ) আছে কি-না দেখা
  • শারীরিক অসুবিধা আছে কি-না তা পরীক্ষা করা
  • পেট পরীক্ষা করা
  • উচ্চতা মাপা

চিকিৎসা ও সেবা প্রদানের স্থান

গর্ভকালীন অবস্থায় কোন জটিলতা দেখা দিলে সাথে সাথে গর্ভবতী মাকে নিম্নের সেবাদান কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে 

  • ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র
  • উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
  • জেলা হাসপাতাল
  • মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র

সেবা প্রদানে ব্যর্থ হলে প্রতিকারকারী কর্মকর্তা
পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা ও পরিবার কল্যাণ সহকারীর ক্ষেত্রে যথাক্রমে মেডিকেল অফিসার এমসিএইচ (এফপি)/ উপজেলা পঃ পঃ অফিসারের কাছে অন্যান্য ক্ষেত্রে উপ-পরিচালক/সহকারী পরিচালক (সিসি) এবং বেসরকারি সংস্থা, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও জাতীয় পর্যায়ের সেবাকেন্দ্রের ক্ষেত্রে কেন্দ্রপ্রধান।